৩৮/২ এলগিন রোড
কলকাতা,
জুন ৪, ১৯২৩
মহাশয়,
বােম্বাইতে অনুষ্ঠিত নিখিল – ভারত কংগ্রেস কমিটি আয়ােজিত সভায় আমি যে বক্তৃতা দিয়েছি, সেই বক্তৃতার ত্রুটিপূর্ণ বিবরণ কলকাতার কয়েকটি কাগজে বেরিয়েছে । সেই রিপাের্টগুলির প্রতি সম্প্রতি আমার মনােযােগ আকর্ষণ করা হয়েছে । ওই সভায় আমি বলেছিলাম যে, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক পরিষদকে বর্জন করার পরিকল্পনা নিলে সেই পরিকল্পনা । ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে বাধ্য । কলকাতায় গত অন্তর্বর্তী নির্বাচনে প্রায় চল্লিশ শতাংশ ভােটদাতা ভােট দিয়েছিলেন । অথচ ওই নির্বাচনে স্বরাজ পার্টি সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় ছিল এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পরিষদীয় নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিস্তর প্রচার চালিয়েছিল । এই ঘটনাটি আমার দুই মন্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করে । আমি আরাে বলেছিলাম যে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভাড়াটিয়া । অধিকার-সংক্রান্ত দুটি বিল পরবর্তী পরিষদের সভায় আনা যেতে পারে । এই দুটি বিলের গুরুত্ব বুদ্ধিজীবী, মধ্যবিত্ত এবং জনসাধারণের কাছে অপরিসীম । এই পরিপ্রেক্ষিতে পরিষদ সম্পর্কে কংগ্রেসের মনােভাব যাই হােক না কেন, বাংলাদেশের ভােটদাতারা পরিষদের পরবর্তী নির্বাচনে তাঁদের প্রতিনিধি অবশ্যই পাঠাবেন । আমার এ – কথা মনে হয় । এই ধারণা থাকার ফলে আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, পরিষদের বিরুদ্ধে প্রচার ব্যর্থ হতে বাধ্য ।
কিন্তু ওই বিলদুটি সম্পর্কে স্বরাজা পার্টির মনােভাব কী হবে, সে – সম্পর্কে আমি একটি কথাও বলিনি । কিছু বলা সম্পূর্ণ অনাবশ্যক বলে মনে হয়েছে আমার কাছে । কারণ, দাবী নাকচ হলে তাে স্বরাজ পার্টি সম্মিলিত, স্বতঃস্ফূর্ত এবং অবিরাম প্রতিরােধ গড়ে তুলবে ।
আমার বক্তৃতার মূল উদ্দেশ্য ছিল এই কথা বলা যে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পরিষদের বিরুদ্ধে – প্রচার ওই রাজ্যে ব্যর্থ হয়ে যাবে।
সুভাষচন্দ্র বসু